দুধ কুমারের জীবন যাত্রা বদলে দিল বাঁশ শিল্প

08/05/2015 12:41

 

হট রিপোর্ট, বাগদা: বাঁশ শিল্প বদলে দিল দুধ কুমার পরিবারের জীবন যাত্রা৷ আজ আর তার স্ত্রী প্রতিমাকে অশ্রু-সিক্ত নয়নে শ্রম-বিক্রী করে ফিরে আসা স্বামীর ফিরে আসা পথের দিকে চেয়ে থাকতে হয়না৷ আজ আর প্রতিমা দেবীর ক্ষুধার্ত ছোট ছেলেটা তার কচি হাত দু’টো দিয়ে দুঃখীনি মায়ের চোখের জল মুছিয়ে আধো আধো গলায় বলে না ‘মা আমার ক্ষিদে লাগিনি’ তুমি কেঁদনা মা৷ আজ আর দুধ কুমারের বৃদ্ধ বাবা-মা মরূভূমির মত ক্ষুধা বুকে চেপে ভাগ্য কে দোষ দিয়ে নিরবে অশ্রু বির্সজন করেনা৷ মেয়ে দু’টি এখন আর বই-খাতা আর স্কুল ড্রেসের জন্য স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেনা৷ তারা এখন আর মা প্রতিমা দেবীকে ধরে যাওয়া গলায় বলেনা মাগো লেখাপড়া করার ভাগ্য নিয়ে আমরা পৃথিবীতে আসিনি৷ বাঁশের তৈরী ঝুড়ী, টুকরী ব্যাবসা করে দুধ কুমার দাস তার পরিবারের জীবন যাত্রার মানোন্নয়ন ঘটিয়েছে৷ আজ দুধ কুমারের দুই মেয়ে আর দশটা মেয়ের মতই স্কুলে পড়াশোনা করে৷ একমাত্র ছেলেটাকে মানুষের মত মানুষ বানাবার জন্য ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ান৷ দুধ কুমারের স্ত্রী প্রতিমা দেবী আজ আর চোখের জল ফেলে, ভাগ্যকে দোষ দিয়ে ফালতু সময় নষ্ট করে না ওই সময় স্বামীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শুরু করেছে ঝুড়ী, টুকরী তৈরীর কাজে তাদের কাজে সহায়তা করে বৃদ্ধা শ্বাশুড়ী কিনী দেবী, বৃদ্ধ দাদু দুলাল মণ্ডল, পড়ার ফাঁকে বড় মেয়ে নীলিমাও৷ দুধ কুমার দাসের বাঁশ শিল্পের মহাজন স্মরজিত দাস জানালেন, তিনি প্রত্যেক কারিগর কে প্রতিমাসে কমপক্ষে ১৫০০০টাকা করে দিয়ে থাকেন৷ সেই হিসাবে দুধ কুমারের বাড়ী কারিগরের সংখ্যা ৩ জন৷ মাসিক আয়ও কমপক্ষে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার কোন সরকারী চাকরী জীবিদের থেকে কম কিসে? দুধ কুমার দারিদ্রতাকে জয় করেছে কর্মকে হাতিয়ার করে৷ এখন আর দুধ কুমার লটারীর টিকিট কেটে ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করেনা৷ কটাদিন পরে হলেও দুধ কুমার ও প্রতিমা দেবী বুঝেছে ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কর্ম থেকে বড় আর কিছুই নেই৷ ভাগ্যের দোহায় দিয়ে যারা কর্ম-বিমুখ হয়ে ঘরে বসে থাকা আর মুর্খের স্বর্গে বাস করা একই ব্যাপার৷